ভোটার তথ্য যাচাই করার নিয়ম কি দেখুন

ভোটার তথ্য যাচাই করার নিয়ম কি দেখুন

ভোটার তথ্য যাচাই

বর্তমানে বেশ কয়েকটি উপায়ে ভোটার তথ্য যাচাই করার সুযোগ থাকলেও তাদের মধ্যে একটি কিংবা দুটি উপায় সব থেকে উত্তম। বাকি উপায়গুলো থেকে একজন ভোটারের সম্পর্কে কিছু তথ্য জানা সম্ভব হলেও বিস্তারিত তথ্য জানা সম্ভব না। তাই আজকে আপনাদের ভোটার তথ্য যাচাই করার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দেয়ার চেষ্টা করবো। কোন উপায়ে ভোটার তথ্য যাচাই করলে ভালো হয় সে বিষয়েও বলবো।

ভোটার তথ্য নিয়ে অনেকেরই অনেক রকম ভুল ধারণা রয়েছে। আমি চাই আপনাদের সেই ভুল ধারণা ভেঙ্গে যাক এবং সঠিক তথ্য জানুন। তাহলে দেরি না করে চলুন শুরু করা যাক। 

{tocify} Stitle={Custom Title}

ভোটার তথ্য কি?

Nid Card এর উপর যা কিছু লেখা থাকে সেটা জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য, ভোটার তথ্য নয়। কারণ ১৮ বছর বয়স না হলে সে ভোটার নয়। অথচ ১৮ বছর বয়সের আগেই জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া সম্ভব। তবে ভোটার তথ্য এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য একই সার্ভারে সংরক্ষতি থাকে। ফলে জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই করলে ভোটারের যাবতীয় তথ্য দেখা যায়।

সুতরাং বলা যায় জাতীয় পরিচয়পত্র করার জন্য আবেদন ফরমে ব্যক্তি সম্পর্কে যে সকল তথ্য উল্লেখ করা হয় সে সকল তথ্যকে একত্রে ওই ব্যক্তির ভোটার তথ্য বলা যায়। শুধু এনআইডি কার্ডের উপর যে তথ্য লেখা থাকে সেগুলোকে ভোটার তথ্য বলা ঠিক না।

ভোটার তথ্য যাচাই কেন করবেন?

বিশেষ করে যারা নতুন ভোটার হয়েছেন তাদের যদি প্রয়োজন নাও থাকে তবুও একবারের জন্য হলেও ভোটার তথ্য যাচাই করা উচিত। দেখা উচিত সকল তথ্য সঠিক আছে কি না। কারণ ভোটার হওয়ার পর অনেকের ভোটার তথ্যে নানা ধরণের ভুল থাকে। সেগুলো ভালো করে যাচাই না করলে ভবিষ্যতে প্রয়োজনের সময় বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। 

নতুন ভোটার হওয়ার পর অনলাইন থেকে Nid Card Download করে যদি দেখেন সেখানে কোন ভুল নেই। তাহলে বুঝবেন জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যে কোন ভুল নেই। তবে অন্যান্য সকল তথ্যে ভুল আছে কি না সেটাও চেক করে দেখা জরুরী। কেননা ভোটার হতে অনেকগুলো তথ্য দিয়ে ফরম পূরণ করতে হয়। এ সকল তথ্য সঠিক আছে কি না চেক না করলে কখনো না কখনো ঝামেলায় পড়তে হতেই পারে।

ভোটার তথ্য যাচাই করার উপায়

ভোটার তথ্য যাচাই করার বেশ কিছু উপায় রয়েছে। সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নিম্নে দেয়া হলো। এর মধ্যে যে উপায়ে ভোটার তথ্য যাচাই করলে আপনার সুবিধা হয় সেই উপায়ে অবশ্যই যাচাই করে দেখবেন। ভোটার তথ্য কোন প্রকার ভুল পরিলক্ষিত হলে সেগুলো সংশোধন করে নেয়া অবশ্যই উচিত।

ভোটার তথ্য Nid Service থেকে যাচাই

অনলাইনে ভোটার তথ্য যাচাই করার উপায় রয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে অবশ্যই ভোটার তথ্য Nid Service এর ওয়েবসাইট থেকে যাচাই করতে হবে। Bangladesh Nid Application System এর ঠিকানা হচ্ছে services.nidw.gov.bd। ভোটার হওয়ার পর এই ঠিকানায় গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে Nid Account তৈরী করতে হবে। তাহলে আপনার প্রায় সকল তথ্যই যাচাই করে দেখে নিতে পারবে।

তবে ভোটার তথ্য Nid Service এর ওয়েবসাইট থেকে যাচাই করলে কিছু কিছু তথ্য দেখা যায় না যেমন- স্বাক্ষর, ভোটার নম্বর ইত্যাদি। বাকী সকল তথ্য অনলাইন থেকে যাচাই করে নিতে পারবেন। 

অফিসে গিয়ে ভোটার তথ্য যাচাই

সব থেকে ভালো হয় অফিসে গিয়ে ভোটার তথ্য যাচাই করলে। যদি সম্ভব হয় তাহলে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে ভোটার তথ্য যাচাই করে আসবেন। অফিসে গিয়ে ভোটার তথ্য চেক করলে অনলাইন থেকে যে সকল তথ্য দেখা যায় না সেগুলোও চেক করে দেখার সুযোগ পাবেন। 

ভোটার নিবন্ধন স্লিপ কিংবা Nid Card নিয়ে অফিসে গিয়ে বলবেন আমার ভোটার তথ্য যাচাই করার জন্য এসেছি। সেখানে কোন ভুল আছে কি না চেক করা প্রয়োজন। তাহলে তারা আপনার ভোটার তথ্যের একটি প্রিন্ট-আউট দেবে। আপনি সুন্দরভাবে চেক করে দেখতে পারবেন।

মোবাইল দিয়ে ভোটার তথ্য যাচাই

Google Play Store এ কিছু কিছু অ্যাপ পাওয়া যায় যেগুলোর মাধ্যমে ভোটার আইডি কার্ড চেক করে দেখা যায়। আইডি নম্বর এবং জন্ম তারিখ দিয়ে সার্চ করলে ছবিসহ ভোটার আইডি কার্ডের নাম, পিতার নাম, মাতার নাম, জন্ম তারিখ ইত্যাদি দেখা যায়।

তবে অ্যাপের মাধ্যমে এই সামান্য কয়েকটি তথ্য ছাড়া তেমন কোন তথ্য পাওয়া সম্ভব না। একজন ভোটারের ভোটার তথ্যে প্রায় ২৮ রকম তথ্য থাকে। এ সকল তথ্য চেক করার মত কোন অ্যাপ আজ পর্যন্ত আমার চোখে পড়েনি।

অন্যান্য আরো কিছু উপায়ে ভোটার তথ্য যাচাই

অন্যান্য আরো কিছু উপায়ে ভোটার তথ্য যাচাই করা যায়। তবে সেখানেও একজন ভোটারের বিস্তারিত তথ্য দেখা যায় না। কিছু সরকারি ওয়েবসাইট আছে, সেখান থেকে সেবা গ্রহণ করতে গেলে এনআইডি নম্বর ভেরিফাই করার অপশন দেয়। সে সকল ওয়েবসাইট থেকেও ছবিসহ ভোটার আইডি কার্ড চেক করা যায়। 

তবে সমস্যা একটাই বিস্তারিত এবং সম্পূর্ণ ভোটার তথ্য দেখা যায় না। কোন ওয়েবসাইটে শুধু ঠিকানা ভেরিফাই হয়। আবার কোন ওয়েবসাইট থেকে পিতা-মাতার নাম ও জন্ম তারিখ ভেরিফাই হয়।

পরিশেষে

পরিশেষে এটাই বলবো যে, নতুন ভোটার হওয়ার পর অবশ্যই একবারের জন্য হলেও সম্পূর্ণ ভোটার তথ্য যাচাই করে দেখবেন। ভোটার তথ্য চেক করার জন্য সম্ভব হলে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিসে যাবেন। অথবা ভোটার তথ্য Nid Service এর ওয়েবসাইট থেকে চেক করবেন।  ভোটার তথ্যে কোন ভুল আছে কি না লক্ষ্য করবেন। যদি কোন ভুল থাকে তাহলে সেগুলো সংশোধন করে নিবেন।

এই ছিলো ভোটার তথ্য চেক করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। এ বিষয়ে যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে কমেন্টস করবেন। আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে চেষ্টা করবো। লেখাটি যদি ভালো লাগে তাহলে বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করার অনুরোধ রইলো। ধন্যবাদ..!

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন