ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে কতদিন সময় লাগে?

ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে কতদিন সময় লাগে?

ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে কতদিন সময় লাগে?

অনেকেই বিভিন্ন কারনে নিজ স্থায়ী ঠিকানায় ভোটার হতে না পেরে বর্তমান ঠিকানায় ভোটার হয়ে থাকে। ফলে কখনো না কখনো তাদের ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে হয়। ভোটার এলাকা পরিবর্তনের বিষয়ে অনেকেরই কমন কিছু প্রশ্ন হচ্ছে ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে কি কি লাগে? ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে কতদিন সময় লাগে? ভোটার এলাকা পরিবর্তন ফি কত টাকা? অনলাইনে কি ভোটার এলাকা পরিবর্তন করা যায়?


এ সকল প্রশ্নের সঠিক উত্তর না জানা থাকলে ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে বেশ ভোগান্তি হতে পারে। কারন সঠিক তথ্য না জেনে কাজ করতে গেলে কিছু ভুল-ভ্রান্তি হতে পারে এবং মূল্যবান সময় ব্যয় করে একাধিকবার অফিসে যাওয়ার প্রয়োজন পড়তে পারে। তাই এ সকল প্রশ্ন সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিতে আজকের এই পোষ্টটি করা। তাহলে চলুন একে একে শুরু করা যাক-

ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে কি কি লাগে?

ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে হলে ভোটার এলাকা পরিবর্তন ফরম ১৩ পূরণ করে আবেদন করতে হয়। কিন্ত কোথায় আবেদন করবেন? আবেদন করতে হবে যে উপজেলায় আপনি ভোটার তথ্য পরিবর্তন করে নিয়ে আসতে চাচ্ছেন সেই উপজেলার নির্বাচন অফিসে। ধরুন আপনি ঢাকা সাভার উপজেলায় ভোটার আছেন এখন ভোটার এলাকা পরিবর্তন করে নিয়ে আসতে চাচ্ছেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলায়। তাহলে আপনি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার নির্বাচন আফিসে গিয়ে ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার জন্য আবেদন করবেন। আবেদনের সাথে নিম্নোক্ত কাগজপত্র জমা দিতে হবে-

ক) ভোটার এলাকা পরিবর্তন ফরম ১৩

খ) বাড়ির বিদ্যুৎ বিল/গ্যাস বিল/পানি বিলের কপি। 

গ) চৌকিদারি ট্যাক্স রশিদ/পৌর করের রশিদ/বাড়ি ভাড়ার রশিদের কপি।

ঘ) ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান/ওয়ার্ড কাউন্সিলরের প্রত্যয়নপত্র।

ঙ) আবেদনকারীর Nid Card এর কপি।

নোটঃ যদি নং ক্রমিকে উল্লেখিত কাগজপত্র আবেদনকারীর নামে না থাকে তাহলে বাড়ির যে কোন একজন সদস্যের নামীয় কাগজপত্র জমা দিলেই হবে। প্রয়োজনে ওই ব্যক্তির আইডি কার্ডের কপি জমা দিয়ে দেবেন এবং আবেদনকারীর সাথে ওই ব্যক্তির কি সম্পর্ক সেটা আইডি কার্ডের কপির উপর লিখে দেবেন। 

ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে কতদিন সময় লাগে?


ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে কতদিন সময় লাগে সে বিষয়ে জানার আগে জানতে হবে কিভাবে ভোটার এলাকা পরিবর্তন হয়। ভোটার এলাকা পরিবর্তনের প্রসেসটা জানলে খুব সহজেই বুঝতে পারবেন ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে কতদিন সময় লাগে।

পুনরায় একবার ধরুন আপনি ঢাকা সাভারের ভোটার এখন কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় স্থানান্তরিত হতে চাচ্ছেন। তাহলে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে ভোটার এলাকা পরিবর্তনের আবেদন করতে হবে। আবেদন করলেন, তারপর অফিস থেকে আপনার আবেদন সার্ভারে এন্ট্রি করবে। আপনি আবেদন করার কতদিন পর আবেদনটি সার্ভারে এন্ট্রি করবে সেটা একমাত্র অফিস কর্তৃপক্ষই জানে। তারা যত দেরি করবে ভোটার এলাকা পরিবর্তনের কার্যক্রম শুরু হতে তত দেরি হবে।

ধরুন তারা আপনার ভোটার এলাকা পরিবর্তনের আবেদনটি সার্ভারে এন্ট্রি করে দিলো এবং আপনার মোবাইলে আবেদনের কার্যক্রম শুরুর ম্যাসেজ চলে আসলো। এর পর কি হবে? এরপর তাদের অর্থাৎ যে উপজেলা নির্বাচন অফিসে আবেদন জমা দিয়েছেন তাদের আর কোন কাজ নেই। বাকি কাজ করবে যে উপজেলায় ভোটার ছিলেন সেই উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে। অর্থাৎ ঢাকা সাভার উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে। কারণ সার্ভারে আপনার আবেদন এন্ট্রি করে দেয়ার পর আবেদনটি যেখানে ভোটার ছিলেন সেখানে চলে গিয়েছে।

এখন ঢাকা সাভার উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে আপনার আবেদন অনুমোদন করে দিলেই ভোটার এলাকা পরিবর্তন হয়ে যাবে। অর্থাৎ বুঝতেই পারছেন ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে কতদিন সময় লাগতে পারে।

তবে কখনো কখনো এই সকল কার্যক্রম ১০-১৫ দিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যায়। আবার কখনো কখনো ১ মাসের উপরে সময় লেগে যায়। এটা সম্পূর্ণই নির্ভর করে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কর্মচারীদের কাজের ব্যস্ততার উপর। তারা যত দ্রুত আপনার কাজ করে দেবে ততই দ্রুত আপনার ভোটার এলাকা পরিবর্তন হয়ে যাবে।

আপনি যদি দ্রুত আপনার ভোটার এলাকা পরিবর্তন করাতে চান তাহলে অফিসে আবেদন জমা দেয়ার পর তাদেরকে আপনার ব্যস্ততা সম্পর্কে বুঝিয়ে বলতে পারেন যাতে তারা দ্রুত কার্যক্রম শুরু করে দেয়। আবেদনের কার্যক্রম শুরুর পর অর্থাৎ প্রথম ম্যাসেজ আসার পর যে উপজেলায় ভোটার ছিলেন সেখানকার অফিসে যোগাযোগ করে আবেদন দ্রুত অনুমোদন করে দিতে অনুরোধ করতে পারেন।

ভোটার এলাকা পরিবর্তন ফি কত টাকা?

আপনি যেহেতু আপনার ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার জন্য ভোটার এলাকা পরিবর্তন ফরম ১৩ পূরণ করে আবেদন করবেন সেহেতু আবেদন ফি কত টাকা জমা দিতে হবে সে বিষয়ে প্রশ্ন আসতেই পারে। অনেকেই আছে যারা আবেদনকারীর সরলতার সুযোগ নিয়ে ভোটার এলাকা পরিবর্তনের জন্য মোটা অংকের ফি চেয়ে বসেন। 

কিন্ত সত্য এটাই যে, ভোটার এলাকা পরিবর্তনের জন্য কোন প্রকার সরকারি ফি জমা দেয়া লাগে না। অর্থাৎ সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে ভোটার এলাকা পরিবর্তনের সুযোগ দেয়া হয়েছে। তাই ভোটার এলাকা পরিবর্তন হেতু যদি কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী ফি দাবি করে থাকেন তাহলে বুঝবেন সেটা সরকারি ফি নয়।

অনলাইনে ভোটার এলাকা পরিবর্তন

অনেকেই জানতে চান ভোটার এলাকা পরিবর্তন অনলাইনে করা যায় কি না? সত্যি এটাই যে এখন পর্যন্ত অনলাইনে ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার আবেদন করা যায় না। হয়তো ভবিষ্যতে অনলাইনে ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার নিয়ম চালু হতে পারে। তাই যতদিন না পর্যন্ত অনলাইনে ভোটার এলাকা পরিবর্তনের নিয়ম চালু হয় ততদিন সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে ভোটার এলাকা পরিবর্তনের আবেদন করতে হবে।

এই ছিলো ভোটার এলাকা পরিবর্তন সম্পর্কিত বিস্তারিত এবং সঠিক তথ্য। ভোটার এলাকা পরিবর্তন সম্পর্কে যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে কমেন্টস করুন। আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে অবশ্যই চেষ্টা করবো। লেখাটি যদি ভালো লাগে তাহলে বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করার অনুরোধ রইলো। ধন্যবাদ..!

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন